Saturday, December 13, 2025
Advertisement
Home উদ্যান কৃষি ‘টপলেডি’ পেঁপে চাষে সফল বদরুজ্জামান

‘টপলেডি’ পেঁপে চাষে সফল বদরুজ্জামান

বাগানে সারিবদ্ধ গাছে ঝুলছে ছোট বড় সবুজ রঙের অসংখ্য পেঁপে। আকর্ষণীয় এসব পেঁপে ‘টপলেডি’ নামে পরিচিত। এ পেঁপে শুধু বাগানের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করেনি, সবুজে মোড়ানো পেঁপেতে স্বপ্ন দেখছেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার যুবক মো. বদরুজ্জামান (৩৮)। মৌসুমে শতাধিক মণ পেঁপে বিক্রির প্রত্যাশা করছেন সফল এ উদ্যোক্তা।

উপজেলার রবিপুর গ্রামের মো. বদরউদ্দীনের ছেলে সফল কৃষি উদ্যোক্তা বদরুজ্জামান।

তিনি বলেন, চলতি বছরের মে মাসে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ২০ শতক জমিতে উন্নত ফলনশীল টপলেডি পেঁপের চারা রোপণ করেছেন। মাত্র ৩ মাসেই চারাগুলো ৩ থেকে ৪ ফুট বেড়ে গেছে। গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত পেঁপেতে ভরে গেছে গাছগুলো। পেঁপে ধরার দৃশ্য দেখে তিনি নিজেও অবাক হয়েছেন। সম্ভাবনা দেখে, তিনি আরও ৭০ শতক জমিতে পেঁপে চাষ শুরু করেছেন

বদরুজ্জামান বলেন, ‘এবার প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে কৃষি বিভাগের সরবরাহ করা চারায় টপলেডি পেঁপে চাষ করেছি। আল্লাহর রহমতে প্রথম বছরেই ফলন ভালো হয়েছে। বাগান থেকে পাইকাররা প্রতিকেজি পেঁপে ২০ টাকা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত বাগান থেকে প্রায় ৩০ মণ কাঁচা পেঁপে ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। আগামী ৬ মাস পেঁপের ফলন থাকবে বলে আশা করছি।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাগানে আরও ৩০ মণ পেঁপে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। মৌসুমজুড়ে বাগান থেকে শতাধিক মণ পেঁপে বাজারজাত করে লাখের বেশি টাকা আয় করতে পারবো বলে প্রত্যাশা করছি।’

বদরুজ্জামান বলেন, তার নতুন বাগানের পেঁপে চারাগুলোও বেড়ে উঠতে শুরু করেছে। তিনি নিজে ও শ্রমিক দিয়ে চারাগুলোর পরিচর্যা করছেন। আগের ২০ শতক জমির পেঁপের ফলন শেষ হওয়ার পর, নতুন বাগানের পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন। এভাবে সারাবছর তার দুটি বাগান থেকে পেঁপে বাজারজাত করতে পারবেন। এ লক্ষ্য নিয়ে তিনি পেঁপে চাষে এগিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, অন্য ফসলের তুলনায় পেঁপে চাষে খরচও তুলনামূলক কম। এলাকার অনেক কৃষক ও তরুণরা তার পেঁপে বাগান দেখতে আসেন। তাদেরও পেঁপে চাষে উদ্বুদ্ধ ও সহযোগিতা করছেন তিনি। বিরল উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পেঁপে চাষে সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছেন তিনি। আগামীতে আরও বেশি জমিতে পেঁপের বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে তার।

উপজেলার ফারাক্কা বাঁধ গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পেঁপের বাগান তৈরি এখন শুধু বদরুজ্জামানের নয়, পুরো এলাকার কৃষক ও বেকার যুবকদের কাছে সম্ভাবনার হয়ে উঠছে। গ্রীষ্মকালীন সবজি হিসেবে পেঁপের চাহিদা বছরজুড়ে। পেঁপে চাষে সার ও কীটনাশকের খরচও কম হয়।

বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, ‘কৃষকদের আমরা একটি প্রকল্পের আওতায় পেঁপে চাষে কারিগরিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছি। এতে উন্নত ফলনশীল টপলেডি পেঁপে চাষে যুবক-কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এভাবে কৃষির প্রতি আগ্রহী তরুণরা নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি চাষ ও উৎপাদনে ভোক্তাদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবেন।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বশেষ

কমলা চাষ করে সফল মাদারীপুরের রাসেল

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া মৃধাকান্দি এলাকায় কমলা চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করেছেন তরুণ উদ্যোক্তা রাসেল হোসেন।দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে বাবার...

পুরোনা আলু সংরক্ষণ করার অনুরোধ কৃষি উপদেষ্টার

আলুচাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরোনো আলু সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো....

দেশে ব্রুসেলা জীবাণুর ভ্যাকসিন উদ্ভাবন

দেশে গবাদিপশুর অন্যতম পরিচিত রোগ হলো ব্রুসেলোসিস। ব্রু‌সেলা অ‌্যা‌বর্টাস (Brucella abortus) নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এ রোগ হয়। এই জীবাণুতে গবাদিপশু আক্রান্ত হ‌লে...

ইউটিউব দেখে ‘কালো ধান’ চাষে সাফল্য

ব্ল‍্যাক রাইস বা কালো ধান। কেউ বলেন ‘প্রিন্স অফ রাইস’। এ ধানের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদা মেটাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার...