Saturday, December 13, 2025
Advertisement
Home আন্তর্জাতিক কৃষি চা বাগানে লাল মাকড়সার আক্রমণ, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

চা বাগানে লাল মাকড়সার আক্রমণ, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দার্জিলিংসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন চা বাগানে কিছুদিন আগে আক্রমণ করেছিল ‘লুপার ক্যাটার পিলার’। সেই ধাক্কা সামলে না উঠতেই এবার আক্রমণ করল লাল মাকড়সা। এর আক্রমণে একরের পর একর চা বাগানের পাতা কুঁকড়ে কালো হয়েছে। এমন বিপর্যয়ে মাথায় হাত পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার চাচাষির

চাচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সূত্র দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিন জানায়, লাল মাকড়সার উপদ্রব চা বাগানে নতুন কিছু নয়। কিন্তু ওই সমস্যা দেখা দেয় মার্চ-এপ্রিলের গরমে। গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় লাল মাকড়শা দ্রুত বংশ বিস্তার করে। বর্ষার মরশুমে বৃষ্টির জলে ধুয়ে যায়। বংশ বিস্তার করতে পারে না। এবার ভরা বর্ষায় একটানা বৃষ্টির দেখা নেই। তার ওপরে বিক্ষিপ্তভাবে যতটুকু বৃষ্টি হচ্ছে তারপরই তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় লাল মাকড়সার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রাতারাতি হেক্টরের পর হেক্টর চা বাগানে গাছের পাতা খেয়ে ফেলছে। ফলে গাছের বৃদ্ধি কমতে শুরু করেছে।

এ পোকার আক্রমণে চা পাতা উৎপাদন উদ্বেগজনকভাবে কমে যাওয়া শঙ্কা বেড়েছে। বাজারে প্রচলিত ওষুধে তেমন কাজ না হওয়ায় উত্তর দিনাজপুর, তরাই এবং জলপাইগুড়ি জেলার কয়েক হাজার ক্ষুদ্র চাষিদের অনেকেই অসময়ে চাগাছ ছেটে ফেলছেন।

কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘এবার চাশিল্প মারাত্মক ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়েছে। ভরা বর্ষায় বৃষ্টি নেই। তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। এর ফলে রোগ পোকার আক্রমণে নাজেহাল দশা হয়েছে।’

বিস্তীর্ণ এলাকার চা গাছের সবুজ দুটি পাতা ও কুড়ি নেই। ঝলসে, কুকড়ে লাল হয়েছে বাগানের পর বাগান।

ময়নাগুড়ির রামশাই এলাকার চাচাষি মানিক সরকার বলেন, ‘এক রাত সময় দিচ্ছে না। এদিকে ওষুধেও কাজ হচ্ছে না। যে পাতা এখন বাগানে রয়েছে তা বিক্রিও হবে না।’

ক্ষুদ্র চাচাষি সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার,  কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর জেলা ও শিলিগুড়ি মহকুমায় ৫০ হাজার ছোট চা বাগান রয়েছে। সেখান থেকে বছরে গড়ে ১ হাজার ২৫০ মিলিয়ন কেজি কাচা চা পাতা উৎপাদন হয়। ওই সমস্ত বাগানে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় এক লাখ। চা পাতা উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাঁদের একাংশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হওয়ার আশঙ্কা।

ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফোরাম অব স্মল টি গ্রোয়ার্সের চেয়ারম্যান রজত কার্জি বলেন, এবার আবহাওয়ার জন্য চাশিল্প ভয়ঙ্কর সংকটের মুখে দাঁড়িয়েছে। চা বাগানের জন্য ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং দিনে রোদ, রাতে বৃষ্টি প্রয়োজন। সেটা মিলছে না। দিনে প্রখর রোদ। বৃষ্টি নেই। তার ওপর এই লাল মাকড়সার হানা। শেষ পর্যন্ত কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে বুঝতে পারছি না।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বশেষ

কমলা চাষ করে সফল মাদারীপুরের রাসেল

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া মৃধাকান্দি এলাকায় কমলা চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করেছেন তরুণ উদ্যোক্তা রাসেল হোসেন।দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে বাবার...

পুরোনা আলু সংরক্ষণ করার অনুরোধ কৃষি উপদেষ্টার

আলুচাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরোনো আলু সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো....

দেশে ব্রুসেলা জীবাণুর ভ্যাকসিন উদ্ভাবন

দেশে গবাদিপশুর অন্যতম পরিচিত রোগ হলো ব্রুসেলোসিস। ব্রু‌সেলা অ‌্যা‌বর্টাস (Brucella abortus) নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এ রোগ হয়। এই জীবাণুতে গবাদিপশু আক্রান্ত হ‌লে...

ইউটিউব দেখে ‘কালো ধান’ চাষে সাফল্য

ব্ল‍্যাক রাইস বা কালো ধান। কেউ বলেন ‘প্রিন্স অফ রাইস’। এ ধানের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদা মেটাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার...