Saturday, December 13, 2025
Advertisement
Home খবর ভারতে রপ্তানি বেড়েছে বাংলাদেশের পাবদা মাছের

ভারতে রপ্তানি বেড়েছে বাংলাদেশের পাবদা মাছের

দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাবদা মাছের রপ্তানি বেড়েছে। একইসঙ্গে দেশটি থেকে কার্প ও সামুদ্রিক মাছের আমদানি কমেছে। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন ভারতে চাহিদা বাড়ায় পাবদা মাছের রপ্তানি বেড়েছে

স্থানীয় মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে , সবশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে মোট এক কোটি ৩৭ লাখ ৪২ হাজার ৬৯০ কেজি মাছ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। এর রপ্তানি মূল্য ছিল তিন কোটি ৮৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৫ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে পাবদা মাছ, যা মোট রপ্তানির ৮৮ শতাংশ। সার্বিক মাছ রপ্তানিতে ইলিশের অংশ ছিল প্রায় চার শতাংশ। এই চার শতাংশ শুধু দুর্গাপূজার উপহার হিসেবে গেছে।

এর আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৮২ লাখ ৯২ হাজার ৫৫০ কেজি মাছ, যার মূল্য দুই কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৭৫ ডলার। সেবারও রপ্তানির বড় অংশ ছিল পাবদা মাছ।

অন্যদিকে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত থেকে মাছ আমদানি হয়েছে এক কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার ৭০২ কেজি। এর আমদানি মূল্য ৭৬ লাখ ৬৩ হাজার ৬৯০ ডলার। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল প্রায় দ্বিগুণের বেশি মাছ, যা পরিমাণে তিন কোটি ৫৪ লাখ ৬ হাজার ৮৮২ কেজি। ওই মাছের আমদানি মূল্য ছিল এক কোটি ৭৩ লাখ ৪১ হাজার ৩৫০ ডলার। মাছের রপ্তানি বাড়লেও উৎপাদন খরচ নিয়ে মাছচাষিরা চাপের মুখে রয়েছেন।

বেনাপোলের সততা ফিশ কোম্পানির মালিক খোকন জানান, তিনি ৪০ একর জলাশয়ে বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ করেন। এর মধ্যে পাবদা, তেলাপিয়া ও রুই জাতের মাছই বেশি।

তিনি বলেন, ‘মাছের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। মাছের খাদ্য, বিদ্যুৎ ও শ্রমের খরচ বেড়েছে। এখন দুই কেজি আকারের রুই মাছ উৎপাদন করতে কেজিতে খরচ পড়ে ২৭০-২৮০ টাকা। ফলে মুনাফা নেমে এসেছে ১০ শতাংশে, যা আগে ৩০ শতাংশের মতো ছিল। বেশি বিনিয়োগে কম মুনাফা হওয়ায় চিন্তায় আছি। আমি সরাসরি মাছ রপ্তানি করি। আমার নিজের ঘের থেকে পাবদা মাছই বেশি রপ্তানি করি ভারতে।’

মাছচাষি ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, যশোরের শার্শা, ঝিকরগাছা, মনিরামপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায় পাবদা মাছের উৎপাদন বেড়েছে। এর কারণ হলো প্রতিবেশী দেশ ভারতে এই মাছের চাহিদা বাড়ছে। সে কারণে চাষিরা রুই, কাতলা ও পাঙাশের চাষ কিছুটা কমিয়ে পাবদা চাষে ঝুঁকছেন।

ভারতে মাছ রপ্তানিকারক, উপজেলার বাগআঁচড়ার জনতা ফিশের স্বত্বাধিকারী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তিনি সব ধরনের মাছ রপ্তানি করেন। তবে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় পাবদা। বছরে শতকোটি টাকার বেশি পাবদা মাছ রপ্তানি করেন।

তিনি বলেন, ‘কেজিতে ১৫-১৬টা হয়, এমন পাবদার চাহিদা বেশি ভারতে। রপ্তানির পাশাপাশি রুই, কাতলা ও সামুদ্রিক মাছ ভারত থেকে আমদানি করি। তবে আগের চেয়ে আমদানি কিছুটা কম।’

বেনাপোল বন্দরের কোয়ারেন্টাইন কর্মকর্তা সজীব সাহা বলেন, ভারতে বাংলাদেশি পাবদা মাছের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন উপজেলায় এর উৎপাদন বেড়েছে। এর মধ্যে যশোর অঞ্চল মাছ উৎপাদনে এগিয়ে। তাই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বশেষ

কমলা চাষ করে সফল মাদারীপুরের রাসেল

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া মৃধাকান্দি এলাকায় কমলা চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করেছেন তরুণ উদ্যোক্তা রাসেল হোসেন।দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে বাবার...

পুরোনা আলু সংরক্ষণ করার অনুরোধ কৃষি উপদেষ্টার

আলুচাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরোনো আলু সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো....

দেশে ব্রুসেলা জীবাণুর ভ্যাকসিন উদ্ভাবন

দেশে গবাদিপশুর অন্যতম পরিচিত রোগ হলো ব্রুসেলোসিস। ব্রু‌সেলা অ‌্যা‌বর্টাস (Brucella abortus) নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এ রোগ হয়। এই জীবাণুতে গবাদিপশু আক্রান্ত হ‌লে...

ইউটিউব দেখে ‘কালো ধান’ চাষে সাফল্য

ব্ল‍্যাক রাইস বা কালো ধান। কেউ বলেন ‘প্রিন্স অফ রাইস’। এ ধানের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদা মেটাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার...