বাংলার শীত মানেই খেজুর রসের মিষ্টি সুবাস। প্রকৃতিতে এখনো পুরোপুরি নামেনি শীত, তবে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে তার আগমনী সুর স্পষ্ট। উপজেলার গ্রামীণ জনপদে শুরু হয়েছে খেজুর রস সংগ্রহের তোড়জোড়।
সকাল-বিকেল দেখা যায়, গাছিরা দা হাতে গাছের মাথায় চড়ে খেজুরগাছ চাঁচছেন, মুখ মসৃণ করছেন কিংবা বাঁশের নল তৈরি করছেন রস সংগ্রহের জন্য। কেউ গাছ কাটছেন, কেউ শুকোতে দিচ্ছেন কাটা অংশ। সব মিলিয়ে গ্রামীণ জীবনে এখন শীতের আমেজ।
গাছিরা জানান, প্রথমে ধারালো দা দিয়ে খেজুরগাছের মাথা কেটে বের করা হয় সোনালি অংশ। এরপর ১২ থেকে ১৪ দিন রেখে পুনরায় চাঁচ দেওয়া হয়। আরও ৭ থেকে ১০ দিন পর গাছ প্রস্তুত হয় রস ঝরার জন্য। সবশেষে বাঁশের নল বসিয়ে শুরু হয় মিষ্টি রস ঝরার প্রক্রিয়া।
তবে আগের মতো এখন আর নেই খেজুরগাছ বা গাছির সংখ্যা। একদিকে গাছের পরিমাণ কমছে, অন্যদিকে নতুন প্রজন্ম কৃষিকাজে আগ্রহ হারাচ্ছে। ফলে অনেক গাছই অব্যবহৃত পড়ে আছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কালীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ৬৯ হাজার খেজুরগাছ রয়েছে।এবার শীতে ১২ হাজার ৯০০ খেজুরগাছ থেকে আহরিত হবে মিষ্টি রস, যা দিয়ে তৈরি হবে গুড় ও পাটালি, ছড়িয়ে পড়বে দেশের নানা প্রান্তে।
স্থানীয় গাছি খোকন মিদা বলেন,‘আমরা বছরের এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি। খেজুর রস শুধু জীবিকার উপায়
নয়, এটি আমাদের পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য।’
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুব আলম বলেন, ‘খেজুরগাছ সংরক্ষণ ও নতুন গাছি তৈরিতে আমরা
নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এতে গাছিদের মধ্যে আগ্রহ কিছুটা হলেও ফিরেছে।’


