কৃষিখাতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দখলে নিতে চায় বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। আজ বুধবার রাজধানীতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ আশঙ্কার কথা বলেন।
নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ড. মোশাহিদা সুলতানা, ডা. জাহেদ মাসুদ, গওহর নইম ওয়ারা ও সালাউদ্দিন বাবলু। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বরকত উল্লাহ মারুফ এবং বিভিন্ন কারিগরি বিষয় উপস্থাপন করেন সানিয়া রিড স্মিথ।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি ওয়ার্নিং দিয়ে রাখি—এরইমধ্যে আমেরিকানদের সঙ্গে যত কথাবার্তা হয়েছে, তারমধ্যে তারা কৃষিতে জিএমও (জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড অর্গানিজম) এনেই ছাড়বে। আমার মন্ত্রণালয় যেহেতু কৃষি মন্ত্রণালয় না, আমি এ বিষয়ে কিছু করতে পারছি না। কিন্তু আমেরিকানদের সঙ্গে যতই কথাবার্তা হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে— তাদের জিএমও আনার জন্য – কৃষিখাত ওরা দখলে নিয়ে নেবে এবং কোম্পানিগুলো চলে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল ও জাপান তো অনুরোধ করে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বলে—কথাই বলতে পারবে না, মানতেই হবে। এরকম একটা অবস্থায় আছি।’
ফরিদা আখতার বলেন, ‘নন-ডিসক্লোজারর এগ্রিমেন্টের বিষয়ে আমার মত হলো— একজন নাগরিক হিসেবে এটি আমরা গ্রহণ করতে পারি না। আমি নিজেই অসহায় বোধ করছি এটার জন্য।’
বাংলাদেশের বড় ঝামেলা হয়ে গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যেহেতু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে আছি, আমাদের কাছে যে কথাগুলো আসে— মাংস আমদানি করতে হবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাংস আসলে ৩০০ টাকায় মাংস খাওয়ানো যাবে, যেখানে এখন বাজারে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় গরুর মাংস খেতে হয়।’
প্রাণিসসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি বলি যে, মাংস আমদানি করা যাবে না, তাহলে তারা বলে— বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় এটি অভিযোগ আকারে যাবে। ফলে আমরা এটা বলতে পারব না। আমাদেরকে বলতে হবে, আমরা কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি না। আমরা মনে করছি, বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মুসলিম এবং এটি হালাল কি না, সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এবং এটার উত্তরে তারা বলছে— এখান থেকে তারা ৩০ হাজার মাওলানা নিয়ে গিয়ে হালাল কায়দায় জবাই করে পাঠাবে। এগুলো আপনাদের আমি বলছি এ কারণে যে, কোথায় গিয়ে চাপটা আছে।’
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘যে পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে, তাতে তারা একটি দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে পারত। দ্বিপক্ষীয় গোপন বাণিজ্য চুক্তিগুলো জনগণের সামনে প্রকাশ করার একটা নজির তারা উপস্থাপন করতে পারত, তাতে বাংলাদেশে গোপন চুক্তি করার চর্চা বন্ধ হয়ে যেত।’


