প্রায় দুই যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া মৎস্য আড়ত। মাত্র দুটি আড়ত থেকে আজ ৩৫টি আড়ত হয়েছে এখানে।পদ্মাপাড়ের এ মাছবাজারের নাম মাওয়া মৎস্য আড়ৎ হিসেবে পরিচিত। বাজারটির ও পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যেমন মাছ ব্যবসায়ীরা তাদের মাছ বিক্রির জন্য আসে, তেমনি ঢাকাসহ দূর-দূরান্তের পাইকারাও এখানে আসে তাজা মাছ কিনতে। তবে
দাম একটু চড়া হলেও তাজা মাছের অভাব নেই।
দেশের নদী থেকে ধরা এখানে সন্ধ্যা রাত্রের আসা কিছু কিছু মাছ বরফ দেওয়া থাকলেও ফরমালিনমুক্ত মাছ এ বাজারে পাওয়া যায়। মাত্র দুই ঘণ্টার এ মৎস্য আড়তে প্রতিদিন ২-৩কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয়ে থাকে।
পাইকাররা এখান থেকে অল্পদামে কিনে ট্রাকে করে ঢাকায় নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করেন। সেইসঙ্গে স্থানীয় স্বচ্ছল ও মাছ প্রিয় মানুষগুলো পদ্মার তাজা মাছ কিনতে ছুটে আসতেন এই পদ্মা পাড়ে। আবার অনেকে বিয়ে-শাদি, জন্মদিন ও অন্যান্য কোন অনুষ্ঠানের জন্য অতিথিদের আপ্যায়নে পদ্মার বড় ও তাজা মাছের জন্য সকাল সকাল ছুটে আসেন। এভাবে করেই ৫-৭জন আড়তদার থেকে এর পরিধি বেড়ে ২৯ জন আড়তদার হয়েছে। এমন কি বড় বড় মাছ দেখার জন্য খোব ভোরে নামাজ পড়ে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে থেকে লোকজন ছুটে আসে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে এ বাজারে।

প্রতিদিন সকালে বেশ জমে উঠতে থাকে এ মাছের বাজার। সেই থেকে শুরুকরে এটি এখন একটি মৎস্য আড়তে পরিণত হয়েছে। জেলেরা এখন আর মাছ নিয়ে ঢাকার আড়তগুলোতে যায় না। বরং তাজা মাছের জন্য পাইকাররাই ছুটে আসেন মাওয়ার এ মৎস আড়তে।
মাওয়া মৎস্য আড়তের সেক্রেটারি মো. চান মিঞা মাদবর বলেন, প্রতিদিন এ আড়ৎ হতে ১ কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয়ে থাকে। বরিশাল, খুলনা, বাগের হাট, ময়মনসিংহসহ পদ্মার ও দেশের বিভিন অঞ্চলের জেলেরা এখানে মাছ নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। সাধারণত ইলিশ সহ বড়বড় মাছ এখানে আসে বেশি। মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকাসহ দেশের দূর-দূরান্ত থেকে মাছের পাইকাররা এখানে এসে মাছ কিনে নিয়ে বিভিন্ন বাজারগুলোতে সরবরাহ করে থাকে।
তিনি বলেন, ভোররাত ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত মাত্র দুই ঘণ্টা বেচাকেনা হয়। যেদিন মাছ বেশি আসে সেদিন কিছুটা বেশি সময় ধরে এখানে মাছের বেচা-কেনা হয়।তবে মাত্র দুই ঘণ্টায় কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়ে থাকে।মাছের দাম টা যদিও একটু বেশি, তাজা ও ভেজালবিহীন মাছের জন্য এ আড়তের সুনাম ইতোমধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন দেশের লোকের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকায় বসবাস করেন যারা এ মাছের আড়ৎ সম্পর্কে জানেন, বড় কোন অনুষ্ঠান হলেই তাজা ও বড় মাছের জন্য ছুটে আসেন এই আড়তে।
চান মিঞা আরও বলেন, এখানে মাছ বেচাকেনা হয় নিলামে বা ডাকের মাধ্যমে।আবার বড় প্রকার মাছের কেজি দরেও পাওয়া যায়।


