ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চায়ের সুনাম রয়েছে সারা বিশ্বে। তবে এবার দার্জিলিংয়ে চা উৎপাদন কমতে শুরু করেছে। একদিকে আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ, অন্যদিকে বাগানে পোকার আক্রমণে ফলনে ধাক্কা দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালে পানির অভাবে শুকিয়ে গিয়েছে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি। তথ্য বলছে, এক বছরে ১০ শতাংশের বেশি চায়ের উৎপাদন কমেছে দার্জিলিংয়ে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ভারতে চা উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ২৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে দার্জিলিং চা উৎপাদন ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমেছে। শুধু তাই নয়, অর্থোডক্স ও সিটিসি চা দেশের বাজারে দাম পাচ্ছে না। অন্যদিকে, কেনিয়া এবং নেপাল থেকে চায়ের আমদানি বেড়েছে।
চা পর্ষদের ওই প্রতিবেদন ঘিরে রীতিমতো আতঙ্কের ছায়া চা ব্যব্সায়ী সমিতিমহলে। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এভাবে চলতে থাকলে চাশিল্প ধ্বংস হতে বাধ্য।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশজুড়ে চা উৎপাদন হয়েছে ৩৩৬ দশমিক ২২ মিলিয়ন কেজি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মে মাসের মধ্যে চা উৎপাদন ছিল ২৬৭ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন কেজি। চা পর্ষদের দাবি, চা উৎপাদনে ২০২৪ সালের তুলনায় উন্নতি ঘটেছে, কিন্তু ২০২৩ সালের তুলনায় উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। সেটার জন্য মূলত প্রতিকূল আবহাওয়া দায়ী। ২০২৩ সালের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে বৃহৎ বড় চা বাগানের উৎপাদন ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

এদিকে, দার্জিলিং চা উৎপাদনের ক্ষেত্রে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মে মাসের মধ্যে ১ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন কেজি উৎপাদন হয়েছে। ২০২৩ সালে একই সময়ের মধ্যে ১ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন কেজি উৎপাদন হয়েছিল। স্বভাবতই ২০২৫ সালে ঘাটতির পরিমাণ ১৮ দশমিক ২৪ শতাংশ হতে পারে। দামের দিক থেকে, ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের শেষের দিকে ডুয়ার্স ও তরাইয়ে উৎপাদিত চায়ের দাম ৯ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।
জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলতি বছরে মোট চা রপ্তানি হয়েছে ৮৫ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন কেজি চা। ২০২৪ সালে ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ মিলিয়ন কেজি। অর্থাৎ ০ দশমিক ১৮ মিলিয়ন কেজি রপ্তানি কমেছে।
এদিকে, ভারতের বাজারে উৎপাদিত চায়ের দাম না মিললেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত দেশটিতে ৯ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন কেজি চা আমদানি হয়েছে। ২০২৪ সালে ছিল ৫ দশমিক ১২ মিলিয়ন কেজি। কেনিয়া থেকে চায়ের আমদানি দ্বিগুণ হয়েছে। আগে ছিল ২ দশমিক ০৫ মিলিয়ন কেজি, এখন হয়েছে ৪ দশমিক ২৬ মিলিয়ন কেজি।


