শখের বসে কোয়েল খামার করেন দিনাজপুর শহরের বালুয়াডাঙ্গা অন্ধ হাফেজ মোড়ের বাসিন্দা ইমরান খান (৩৫)। তার এ শখ রুপান্তর হয়েছে আয়ের উৎস হিসেবে। এ থেকে বর্তমানে মাসে লক্ষাধিক টাকায় আয় করছেন তিনি।
খামারি ইমরান খান বলেন, ‘৭ বছর আগে শখের বশে ছেলে-মেয়েকে ১০টি কোয়েল পাখি কিনে দিয়েছিলাম। তখনই এই খাতের সম্ভাবনা চোখে পড়ে। আস্তে আস্তে খামার গড়ে তুলেছি। এখন প্রতি চার দিন পরপর আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার বাচ্চা হ্যাচারিতে ফুটিয়ে বিক্রি করছি। প্রতিদিন শহরে বাহাদুর বাজারের ব্যবসায়ীরা ৮০০-১০০০ ডিম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি মাসে আয় হচ্ছে লক্ষাধিক টাকা।’
সফল এ খামারি বলেন, ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীর সহযোগিতায় ৩০০ কোয়েল পাখি নিয়ে খামার শুরু করেন। ধীরে ধীরে পরিসর বেড়ে যায়। কোয়েলের ডিম ও খাদ্যের হিসাব করে দেখা যায়, খরচের চেয়ে লাভ প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিটি কোয়েল পাখি ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ডিম দেওয়া শুরু করে। একটানা ১৮ মাস ডিম দেয়।
ইমরান খান আরও বলেন, খামার চালাতে গিয়ে একসময় ডিম ফোটানোর প্রয়োজনিয়তা অনুভব করেন তিনি। শুরু করেন বাচ্চা ফোটানোর হ্যাচারি। এখন প্রতি ৪ দিন পরপর হ্যাচারি থেকে ২৫০০-৩০০০ কোয়েলের বাচ্চা উৎপাদন ও বিক্রি করছেন । দিনাজপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাটসহ আশেপাশের জেলা গুলো থেকে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা তার কাছ থেকে এক-দুই দিনের বাচ্চা কেনেন। প্রতিদিন তার কাছ থেকে এক হাজার থেকে দেড় হাজার ডিম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিটি ডিম বিক্রি হয় ৩ টাকা দরে। একদিনের বাচ্চা বিক্রি হয় ৭ থেকে ৮ টাকায়। একটি ডিম পাড়া কোয়েল পাখি বিক্রি হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।
দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশিকা আকবর তৃষা বলেন, ‘কোয়েল পাখির খামার গড়ে তুলে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। কোয়েলের ডিম আকারে ছোট হলেও পুষ্টিগুণে মুরগি বা হাঁসের ডিমের সমতুল্য। কোয়েল পাখির মাংস নিরাপদ খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। খামারি ইমরান নিজ উদ্যোগে একটি সফল খামার গড়ে তুলেছেন। সেখানে শুধু নিজের নয়, অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে নিয়মিত তার খামার পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছি।’


