হারিয়ে যাওয়া ‘ভাসা মানিক’সহ কয়েক জাতের ধান খুঁজে পেয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যটির আবহাওয়া দপ্তরের আশঙ্কা, এবার ব্যাপক বৃষ্টি হতে পারে। অতিবৃষ্টি এবং বিভিন্ন নদী বাঁধ থেকে জল ছাড়ার ফলে হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কত একর জমি প্লাবিত হবে, তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা শুরু হয়েছে। ঠিক এই সময় ওয়েস্ট বেঙ্গল বায়োডাইভারসিটি বোর্ড জেলা কৃষি দপ্তরসহ রাজ্যের ৫৪ বীজভান্ডারে ধানের এমন কিছু বীজ পাঠিয়েছে. যতই বৃষ্টি হোক ওই ধানগাছে পচবে না। জমিতে যদি ৭ ফুট পানি জমলেও তার ওপরে ভেসে থাকবে ধানের শীষ। বেঁচে থাকবে ধানগাছ। শুধু বেঁচে থাকাই নয়, ৯০ দিনের মধ্যে ধানের শীষ পাকবে।
তিন প্রজাতির ধানের জাতের নাম ‘ভাসা মানিক’, ‘ভাদুই’, ‘রায়গড়’। ওয়েস্ট বেঙ্গল বায়ো ডাইভারসিটি বোর্ডের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. অনির্বাণ রায়ের কথায়, “এই তিন প্রজাতির ধান সম্পূর্ণ দেশীয়। রাঢ় বাংলায় বহু আগে চাষ হতো। তবে কম সময়ে বেশি ধানের জন্য শংকর প্রজাতির ধানের দিকে ঝুঁকেছিল কৃষকদের একটা বড় অংশ। চাষিদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে কৃষি দপ্তরও উৎসাহ দিয়েছিল। কিন্তু ঘনঘন আবহাওয়ার বদল এবং ফি বছর অন্তত ছয়টি জেলায় বন্যার মতো অবস্থা দেখা দেওয়ায় এবার প্রতিটি ব্লকে আমন ধানের অন্য প্রজাতির সঙ্গে এই তিনটি বীজও সরবরাহ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দু-একবার জমি চষে ফেলার পরেই এই বীজ গ্রেফ ছিটিয়ে দেওয়া হয়। কনায় জমিতে ৭ ফুট জল দাঁড়ালেও ধানগাছ তার থেকেও উঁচু হবে।’
এক বিভাগীয় কর্তার কথায় ধানের শীষে পানি লাগবে না। পোকায় কাটবে না। তিন মাসের মধ্যে ধানের শীষ পাকবে। কৃষক নৌকা করে ধান কেটে ফিরবে।
আবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো রুক্ষ পাথুরে জমিতেও চাষের অনুকূল ধানের জাত খুঁজে পেয়েছে কয়ো ডাইভারসিটি বোর্ড। বায়ো ডাইভারসিটি বোর্ড এখন অযোধ্যা পাহাড়ের উপর পাথুরে জমিতে ধান চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। কৃষি দপ্তরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় আদিবাসীদের এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে। বর্ষার আগেই ‘নয়তা প্রজাতির’ ধান কৃষকের গোলায় উঠবে। বলা ভালো, বর্ষায় খাবার সংগ্রহ প্রায় সম্পূর্ণ এই তিন জেলায়।


