যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন ২০২৫ সালের জন্য বিশ্বের ২৭টি দেশের ৩৯ জনকে কৃষি ও খাদ্য খাতের অগ্রদূত (Top Agri-Food Pioneer) হিসেবে পুরস্কৃত করেছে। এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের শীর্ষ উদ্যোক্তা, লাল তীর সিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
চার দশকের বেশি সময় ধরে কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থায় অব্যাহত অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এই আন্তর্জাতিক সম্মাননা অর্জন করেছেন। এর আগে বাংলাদেশ থেকে প্রথম ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ পেয়েছিলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদ। কৃষি ও খাদ্যখাতের নোবেল হিসেবে খ্যাত এই পুরস্কার গত মঙ্গলবার রাতে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এই সম্মানিত ব্যক্তিরা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের সীমানা পেরিয়ে বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে অবদান রাখছেন। তারা টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন এবং খাদ্যের জন্য একটি নতুন ভবিষ্যত নির্মাণে সহায়ক ভূমিকা রাখছেন।’
তারা জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ২১-২৩ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যের ডেস মইনসে নরম্যান ই. বোরলাগ আন্তর্জাতিক সংলাপের সময়ে ৩৯তম বার্ষিকীতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশে বীজ, সবজি ও প্রাণিসম্পদখাতের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। ১৯৮১ সালে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে ১৯৯৪ সালে ২৫ একর জমিতে বীজ উন্নয়ন গবেষণাগার ও খামার স্থাপন করে লাল তীর সিডস লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থার পর্যবেক্ষণে সপ্তম শীর্ষ বীজ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত। এ ছাড়া বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের (অইএসটিএ সনদপ্রাপ্ত) বীজ পরীক্ষাগার স্থাপন করেছেন আবদুল আউয়াল মিন্টু।
দেশে প্রথমবারের মতো মহিষের জীবন রহস্য উন্মোচন, গরু মোটাতাজাকরণের জন্য উন্নতমানের সিমেন ব্যবহারের প্রবর্তন এবং হাইব্রিড ও উন্নত বীজের প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। তার উদ্যোগে বাংলাদেশের সবজি উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।
পুরস্কারপ্রাপ্তির বিষয়ে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষক ও জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে অবদান রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই পুরস্কার আমাকে নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে কাজ করতে আরও অনুপ্রাণিত করবে।’


