গরু পালনের পাশাপাশি ঘাস বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের নওদাবাস গ্রামের বাসিন্দা কাজল মিয়া (৩৬)। পরিত্যক্ত জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করে বর্তমানে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হিসেবে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি।
কাজল বলেন, প্রতিদিন সকালে ঘাস কেটে ভ্যানে করে নিয়ে যান সদরের বড়বাড়ী বাজারে। সেখানে কৃষক, গৃহস্থ, গরুর খামারি—বিভিন্ন শ্রেণির লোকজন তার ঘাস কিনে নেন। প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত ঘাস বিক্রি হয়।যা মাসে ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা আয় হয়।
তিনি বলেন, প্রতিটি ঘাসের আঁটি আকার অনুযায়ী ১০ থেকে ২০ টাকা দামে বিক্রি হয়। আগে অল্প মজুরিতে দিনমজুরি করতাম, তখন সংসার চালানো কষ্টকর ছিল। এখন নিজের জমিতে ঘাস চাষ করে ঘরে বসে আয় করছি।
কাজলের পরিবারে রয়েছেন তার বাবা-মা, স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন (২৬), পাঁচ বছরের ছেলে মাহিন বাবু ও দুই বছরের মেয়ে কাশফিয়া জান্নাত। কয়েকটি গরু পালন করছেন তিনি, যা তার আয়ের আরেকটি উৎস।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে কাজল বলেন, ‘আমি চাই আমার ছেলে একদিন সেনাবাহিনীর বড় অফিসার হোক, আর মেয়েটিকে ডাক্তার বানাতে চাই। ঘাস চাষের পরিধিও আরও বাড়াতে চাই। যদি সরকার সহযোগিতা করে, তাহলে বড় পরিসরে ঘাসের ব্যবসা শুরু করে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারব।’
বাজারে ঘাস কিনতে আসা খামারি জলিল হোসেন (৫৪) বলেন, ‘এই বাজারে অনেকেই ঘাস বিক্রি করেন, তাদের মধ্যে কাজল অন্যতম। এখানে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী দামে ঘাস পাওয়া যায়, যা আমাদের গরুর খাদ্য হিসেবে উপকারী।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে গবাদি পশুর খাদ্যসংকট দেখা দিলে এই ঘাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঘাস চাষে আগ্রহীদের আমরা সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।’