নাটোরের পদ্মার চরে চাষ শুরু হয়েছে অপ্রচলিত দানাদার সুপারফুড শস্য ‘ঢেমসি’র। জেলার লালপুর উপজেলার পদ্মার চরে এ বছর প্রথমবারের মতো এটি চাষ হয়েছে।
লালপুরের পদ্মা চরের বিলমাড়িয়া এলাকায় প্রায় এক বিঘা জমির ঢেমসি গাছে শুভ্র-সুন্দর ফুলের সমারোহ। ফুলের মাঝে খানিকটা লাল আভা ছড়ানো।
ঢেমসি চাষ করেছেন কৃষক মুনতাজ আলী। নতুন এই শস্য দেখতে প্রতিদিন আশপাশের অসংখ্য কৃষক ভিড় করছেন। তারা চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিচ্ছেন।
ঢেমসি চাষি মুনতাজ আলী জানান, ‘প্রায় এক বিঘা জমি চাষে খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। এই জমিতে সার ও কীটনাশকের ব্যবহার নেই। সেচেরও প্রয়োজন হয় না। এই জমিতে আগাছা নেই বললেই চলে। অগ্রহায়ন মাসে বীজ বুনেছি। আগামী তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’
একই এলাকার কৃষক রবিউল বাসসকে বলেন, ‘আগামী বছর আমার জমিতেও ঢেমসি চাষ করব।’
ঢেমসি (ফ্যাগোপাইরাম এস্কুলেন্টাম) হচ্ছে এমন একটি উদ্ভিদ যেটি এর শস্যদানাসদৃশ বীজের জন্য চাষ করা হয়। এটি মাটির আচ্ছাদনী শস্যরূপেও চাষ করা হয়। ইংরেজি বলয়ে এটি বাকহুইট বা কমন বাকহুইট নামে পরিচিত।
স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এলাকার কৃষকরা ঢেমসি চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন। আশা করি আগামী মৌসুমে এ ফসল চাষের পরিধি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। তখন এই জমিতে মধু আহরণ করা সম্ভব হবে। এ জন্য এলাকায় এটির চাষাবাদ সম্প্রসারণে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।’
লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, সুপারফুড খ্যাত ‘বাকহুইট’ অর্থাৎ ঢেমসি পুষ্টিগুণে অসাধারণ। এর চালে পর্যাপ্ত প্রোটিন ছাড়াও আছে মিনারেল, ফাইবার, ভিটামিন-বি, জিংক ও সেলেনিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসারন ও অ্যাজমা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। উচ্চমূল্য ফসল হিসেবে অপার সম্ভবনাময় এটি হবে আগামীতে চরের দ্রুত বর্ধনশীল ফসল।


