পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের অনন্তপাড়া গ্রামের শিক্ষিত যুবক মো. সুজন হাওলাদার ও তার ফুুফাতো ভাই জাকারিয়া হাসান জনি ইউটিউবে ভিডিও দেখে শুরু করেছিলেন মুক্তা চাষ। বছর শেষে পেয়েছেন সফলতাও। যার ফলে গ্রামের শিক্ষিত যুবকরাও পুকুর কিংবা জলাশয় মাছ চাষের পাশাপাশি মুক্তা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
মো. সুজন হাওলাদার বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালের প্রথম দিকে মাত্র ৭’শ ঝিনুক দিয়ে মুক্তা চাষ শুরু করি। এতে আমার ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। বছর শেষে ১ লক্ষ আশি হাজার টাকা বিক্রয় করি। বর্তমান বছরে আমার পুকুরে ৬ হাজার ঝিনুকে মুক্তা চাষ চলছে। এবার ৩ লাখ টাকার মুক্তা বিক্রি হবে বলে আশা করছি। মুক্তা চাষে সময় বেশি লাগে কিন্তু খরচ কম, লাভের পরিমাণ বেশি। খাবার দেওয়ার দরকার হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দেখাদেখি এলাকার শিক্ষিত যুবকরা মুক্তাচাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন এবং কেউ কেউ শুরু করেছেন। তারা চাকরির পেছনে না দৌড়ে আমার কাছে এসে মুক্তাচাষের পরামর্শ নিচ্ছেন।’

সুজন হাওলাদারের দেখাদেখি তার ফুফাত ভাই বরিশাল বিএম কলেজের বাংলা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র মো. জাকারিয়া হাসান জনি মুক্তা চাষ শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘ইউটিউবের মাধ্যমে কীভাবে মুক্তাচাষ করে এমন ভিডিও দেখে সুজন ভাইয়ের পরামর্শ নিয়ে শুরু করেছি। পরে ময়মনসিংহ মুক্তা চাষ ইন্সটিটিউটে গিয়ে মুক্তাচাষের প্রশিক্ষণ হাতে কলমে শিখে এসে বাণিজ্যিকভাবে পুকুরে মুক্তা চাষ শুরু করেছি। মুক্তা চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। একটা ঝিনুকে খরচ হয় ৩০-৩৫ টাকা। কিন্তু বিক্রি হয় ৪০০-৪৫০ টাকা। আমি মুক্ত চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছি।’

এলাকার শিক্ষিত যুবক রনি বলেন, ‘বর্তমান যে অবস্থা তাতে চাকরি পাওয়া অনেক সমস্যা। আমি পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুরে মুক্তার চাষ করতে চাই। এজন্য সুজন ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে পুকুরে মুক্তাচাষ করবো।’
পটুয়াখালী জেলা মৎস কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, ‘সরকারিভাবে মুক্তা চাষকে ছড়িয়ে দিতে সরকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য সম্পদ গবেষণা ইনিষ্টিটিউটের মাধ্যমে প্রশিক্ষণসহ সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। এ অঞ্চলের যুবকরা মুক্ত চাষে আগ্রহ দেখালে আমরা সহযোগিতা করবো।’


