মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে নিষিদ্ধ ভেসাল ও ধর্মজাল দিয়ে খাল-বিলে মাছ ধরা হচ্ছে। এর ফলে নিধন হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতীর দেশীয় মাছের পোনা। ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে অনেক প্রজাতির মাছ। প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে মাছ ধরা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
দেশে ভেসাল পেতে ধর্মজাল দিয়ে খাল-বিলে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষিত হলেও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানসহ কয়েকটি উপজেলার সর্বত্রই চোখে পরে ভেসাল ব্যবহারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৎস্য অধিদপ্তর থেকে উপজেলার উন্মুক্ত জলাশয়ের কয়েকটি পয়েন্টে রুই-কাতল-মৃগেলের পোনা ছাড়া হয়েছে। এক শ্রেণির মৎস্যজীবী খাল-বিলে ভেসাল দিয়ে এসব পোনাও ধরে ফেলছেন। উপজেলার কোলা, ইছাপুরা, শেখরনগর, লতব্দি, মালখানগর, জৈনসার, মধ্যপাড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ভোসাল জাল দিয়ে প্রতিনিয়তই মাছ ধরতে দেখা যায়।
কেবল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে নয়, শ্রীনগর-লৌহজং ও টংগীবাড়ি উপজেলার পদ্মা সংলগ্ন সিংহেরহাটি, নাগেরহাট, মাওয়া, কাজির পাগলা, ভাগ্যকুলসহ বিভিন্ন এলাকার একই চিত্র।
এ তিনটি উপজেলায় তিন শতাধিক ভেসাল ও ধর্ম জাল রয়েছে, যা বেশিরভাগই খালের মধ্যে একটু পরপর দেখা যায়। অনেক এলাকায় একটি ভেসাল থেকে আর একটি ভেসালের দূরত্ব ১শত থেকে দেড়শ গজের মধ্যে। কোনো তদারকি না থাকায় অবাধে মাছের পোনা নিধন হয়ে যাচ্ছে।
কোলা ইউনিয়নের টিটু খান, মো. সেলিম শেখ, রুবেলসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দেশীয় প্রজাতির নানা প্রকার মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। এখন নদী-খাল-বিলে আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। আগে উন্মুক্ত জলাশয়ে, কৈ, শিং, মাগুর, সরপুঁটি, টেংড়া, বাতাসি, খৈলসা, টাকি, মলা, ঢেলা, তপসিসহ নানা প্রকার মাছ পাওয়া যেত। আগে নদী-খাল-পুকুরে বড় মাছের মধ্যে রুই-কাতল-মৃগেল, কালিবাউস, আইড়, শোল, বোয়াল পাওয়া যেত। এখন চাষ ছাড়া কোনো মাছই পাওয়া যায় না।
তারা বলন, এখন তাই বাধ্য হয়ে চাষের মাছ খেতে হয়। এ মাছে তেমন স্বাদ পাওয়া যায় না। এ ছাড়া দেশীয় মাছের মতো তা পুষ্টিকরও না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজদিখান উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. আক্তামুন লিন্নাস বলেন, ‘ভেসাল অবৈধ। আমরা কিছু তুলে দিয়েছি। বন্ধ করে দিলে আবার কয়েকদিন পরেই শুরু করে দেয়। এখন কিছু রয়েছে। তা আমরা দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধমে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি।’


